মহান বিজয় দিবসের ৫৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর ভোর থেকে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণকে সাজানো হয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে।স্মৃতিসৌধ এলাকা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে। শহীদ বেদি, মূল স্তম্ভ ও অভ্যন্তরীণ হাঁটার পথগুলো রঙের ছোঁয়ায় নতুন করে সাজানো হয়েছে। স্মৃতিসৌধের লেক সংস্কার শেষে সেখানে নতুন পানি ভরা হয়েছে এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য লাল শাপলা স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি পুরো প্রাঙ্গণে লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ ও সাদা রঙের ফুলগাছ রোপণ করা হয়েছে।নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে স্মৃতিসৌধজুড়ে জোরদার নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সাম্প্রতিক একটি সহিংস ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। ফলে পূর্বের তুলনায় এবছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। স্মৃতিসৌধ এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা ও এলইডি লাইট স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সব আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হয়েছে।জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ আনোয়ার খান আনু জানান, বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, কূটনৈতিক কোরের ডিন এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এই সময় নিরাপত্তাজনিত কারণে সাধারণ জনগণের প্রবেশ সীমিত থাকবে। আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সর্বসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক জানান, জাতীয় স্মৃতিসৌধে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাভারের আমিনবাজার থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে। পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে চার হাজারেরও বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।এদিকে তথ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বিজয় দিবস উপলক্ষে গাবতলী থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত কোনো ধরনের পোস্টার, ব্যানার বা ফেস্টুন স্থাপন করা যাবে না। পাশাপাশি পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় ফুলের বাগান ও সৌন্দর্য যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়—সে বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।লাখো মানুষের বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ উৎসবমুখর হয়ে উঠবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই দিবস উদযাপনে অংশ নেবেন। এর মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হবে।