কলিকাতা প্রতিনিধ : বুধবার, সকাল দশটায়, রানী রাসমণি রোড এর সংযোগস্থলে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর আহবানে এবং কান্তি গাঙ্গুলীর উদ্যোগে পালিত হলো- বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস এবং মিছিল ও সমাবেশ।
আমরাও পৃথিবীর সন্তান- এই ট্যাগ লাইনকে ব্যবহার করে, বিভিন্ন দাবী নিয়ে, কয়েকশো প্রতিবন্ধী ভাই-বোনেরা, আজকের এই প্রতিবন্ধী দিবসে উপস্থিত হন মিছিল করে, তাদের দাবী আদায়ের জন্য, শুধু দাবী আদায় নয়, তারা এক প্রকার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গর্জে উঠে বলেন আমরা ডিএম অফিস ঘেরাও করব মার্চে যদি আমাদের দাবী না মানেন, প্রতিটি এলাকায় এলাকায় যে ডিএম অফিস আছে আমরা ধরনা দেবো, যতক্ষণ না আমাদের দাবী গুলি পূর্ণ না হয়,
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মেয়র এবং আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, উপস্থিত ছিলেন ডঃ পূন্যব্রত গুণ, এম আর এস হাসপাতালের চিকিৎসক শ্রীমতি অদিতি বন্দ্যোপাধ্যায়, উপস্থিত ছিলেন শ্রীযুক্ত সৌরভ সিংহ, এবং সাম্য গাঙ্গুলী সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
সুন্দর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে, প্রতিবন্ধী ভাই বোনেদের নাচ ও গানের উজ্জল আলোয় মেতে উঠেছিল এই মঞ্চ এবং শুভ সূচনা, একে একে প্রত্যেক অতিথিকে উত্তরীয় পরিয়ে ,হাতে একটি করে চারাগাছ ও স্মারক দিয়ে সম্মানিত করেন।
বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিবন্ধী ভাইবোনেরা এই সমাবেশে উপস্থিত হন প্রতিবছরের ন্যায়, সমাবেশ থেকে তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন, শুধু তাই নয় তারা বলেন সরকার পূজো খেলা-মেলায় টাকা দিচ্ছে, প্রতি বছর তাদের টাকা বাড়াচ্ছে, আর প্রতিবন্ধীদের কে মাত্র এক হাজার টাকা দিচ্ছে। আর আর এক হাজার নয় আমাদের মিনিমাম পাঁচ হাজার টাকা করে দিতে হবে, আর সরকারকে আমরা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছি, আর মধ্যে যদি আমাদের দাবী-দাওয়া না মেটে, ডিএম অফিস থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু অবরুদ্ধ করে দেবো। দেখতে চাই প্রশাসন আমাদেরকে কি করতে পারে, এমনকি সরকার আমাদের স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে সেটিও চালু করতে হবে। আমরা স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই, আমরা বহুবার সরকারকে ডেপুটেশন দিয়েছি, কিন্তু সরকার বারবার আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু কোনরকম কাজ করেননি , তাই আর নয় এই মঞ্চ থেকেই আমরা ঘোষণা করছি।
আমাদের দাবীগুলি হল…
১০০ দিনের কাজ দিতে হবে।,
১৬ বছরের ঊর্ধ্বে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের, বিপিএল তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করনের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায় মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।।
গুরুতর মাত্রার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য, স্পেশাল জি আর এর ব্যবস্থা করতে হবে।
কেন্দ্রীয় রাজ্য সরকার সমস্ত দরিদ্র দূরীকরণ প্রকল্পে প্রতিবন্ধী অধিকার আইন মোতাবেক ৫% অর্থ, তথা ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।।
প্রতিবন্ধী অধিকার আইন মোতাবেক, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কৃষি জমির পাট্টা এবং প্রতিবন্ধী পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে সরকারি জমি প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা দানের উদ্দেশ্যে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পরিসংখ্যানগত রেজিস্টার তৈরি করতে হবে, প্রতিবন্ধকতার ধরন শতকরা হার, শিক্ষা, বয়স, পারিবারিক আয় ,প্রশিক্ষণ, কর্মদক্ষতা ,সরকারি সাহায্য এবং ভাতা, প্রার্থী বিপিএল কার্ড সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান সম্মিলিত তথ্য ভান্ডার পঞ্চায়েত স্তরে তৈরি করতে হবে।
প্রতিবন্ধী ছাত্র বৃত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি, স্ক্রাইভ ও রিডার অ্যালাউন্স বৃদ্ধিসহ, ইনক্লুসিভ এডুকেশনের উপযুক্ত শ্রেণীকক্ষ, পাঠক্রম ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতিবন্ধী অধিকার আইন মোতাবেক উচ্চ শিক্ষার 5% এবং চাকুরীতে ৪ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্লকে ব্লকে স্পেশাল ক্যাম্প করে প্রতিবন্ধকতার সংস্থাপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এবং বি এম ও এইচ এর দপ্তর থেকে প্রতিবন্ধকতার মূল্যায়ন করতে হবে।
পঞ্চায়েত স্তরে শিশু ও মহিলা প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা বিষয়ে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এইরকম বেশ কিছু দাবী নিয়ে আজকের এই প্রতিবন্ধী দিবসে তারা রানী রাসমণি রোডে মিছিল সমাবেশ করে সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। আগামী দিনে এই প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েরায় ভবিষ্যৎ এ করতে পারে। আর কিভাবে তাদের ন্যায্য দাবী ছিনিয়ে নেবে।
রিপোর্টার , সমরেশ রায় ও শম্পা দাস , কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ

